ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে পাকিস্থানকে জেতালেন বাবর আজম

পাকিস্থানকে জেতালেন বাবর আজম

বাবর আজম আর রিজওয়ান ওপেনিংয়ে নেমে পাকিস্থানকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবেন দুইজনের যে কোন একজন। গত কয়েক বছরে পাকিস্থানের টি-২০ ক্রিকেটে এই ট্র‍্যাডিশন চলে আসছে।

দুইজন আউট হয়ে গেলেই নড়বড়ে পাকিস্থান। এমনটিই দেখা যাবে পাকিস্থানের হেরে যাওয়া বিগত কয়েকটি ম্যাচের পরিসংখ্যানে।

চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্থানের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইনিংসের আদ্যপান্ত ব্যাট করেছেন রিজওয়ান। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে সে কাজটি করলেন বাবর আজম। তাতেই পরপর দুইম্যাচ জিতে নিল পাকিস্থান।

শুরুতে হাত খুলে মারতে থাকেন বাবর। জয়ের লক্ষ্য অবশ্য খুব একটা বড় ছিল না। প্রথমে ব্যাটিং করে নিউজিল্যান্ড পাকিস্থানের সামনে টার্গেট দিতে পেরেছে ১৪৮ রানের।

বাবর ছিলেন প্রথম ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক। তবে উইকেটে সেট হয়ে যাবার পর কিছুটা নিজেকে গুটিয়ে নেন বাবর। অপর প্রান্তে রিজওয়ান আউট হয়ে যান অল্প রানে। ১২ বল খেলে তিনি করেন মাত্র চার রান। যদিও বাবরের কল্যাণে দলীয় রান তখন ৩৬।

রিজওয়ানের পর ওয়ানডাউনে নামা শন মাসুদকেও হারায় পাকিস্থান আর কোন রান জমা না করেই। এ সময় টু ডাউনে পাঠানো হয় অলরাউন্ডার শাদাব খানকে। টি-টুয়েন্টি ম্যাচে তিনি যে দারুণ কার্যকরী হয়ে উঠতে পারেন এমন সম্ভাবনাই দেখালেন আজ।

চাপের মুখে নেমে ২২ বলে করেছেন ৩৪। দুই চার ও দুই ছয়! তার চেয়েও বড় বিষয় ছিল অধিনায়ক বাবর আজমের সাথে পার্টনারশীপে করেছেন ৬১ রান। এই জুটি স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করে পাকিস্থানকে নিয়ে আসেন জয়ের কাছাকাছি।

যদিও একপ্রান্তে বাবর আজম অপরাজিত ছিলেন। তবুও পাকিস্থানের নড়বড়ে মিডল অর্ডারে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পরও নির্ভরযোগ্যতার ছাপ এখনো কারো মধ্যে পরিষ্কারভাবে নেই। সেজন্যই বলপ্রতি রান এমন সমীকরণেও কিছুটা শংকা ছিল পাকিস্থানের জয় নিয়ে।

আরও পড়ুন: ক্যান্সারকে বাউন্ডারিতে আছড়ে ফেলা এক যুবরাজ

শাদাব খানের পর মোহাম্মদ নওয়াজ আর হায়দার আলী সেই সব শংকাকে উড়িয়ে দেন। তবে টার্গেট আরও একটু বড় হলে কী হত সেটা আরেক প্রশ্নের বিষয়!

বাবর আজম শেষ পর্যন্ত করেছেন দলীয় স্কোরের অর্ধেকেরও বেশি রান। ৫৩ বলের মোকাবেলায় করেছেন ৭৯ রান। সাবধানী এই ইনিংসে একটিও ছক্কা নেই। তবে বাউন্ডারি মেরেছেন এগারটি।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের সূচনা ছিল আশা জাগানিয়া। তবে সম্মুখ সারির ব্যাটসম্যানরা রয়েসয়ে খেলতে গিয়ে দলের জন্য চাপ বয়ে আনেন। সেই চাপ থেকে উত্তরণের পথ বের করতে পারেননি কেউই।

উদ্বোধনী ব্যাটার ফিন অ্যালেন ৮ বলে ১৩ রান করে ফেরেন। তার ইনিংসে ছিল ৩টি বাউন্ডারি।  কিন্তু পরের তিন ব্যাটসম্যান ওয়ানডে ষ্টাইলে খেলে ৮১ বলে করেন ৮৫ রান! এখানেই পিছিয়ে পড়ে নিউজিল্যান্ড।

ডেভিড কনয় দুটি করে চার ছক্কা মারলেও ৩৫ বলে করেন ৩৬ রান। কেন উইলিয়ামসনের ৩০ বলের ৩১ রানের ইনিংসে ছিল একটি চারের মার। তাকে অনুসরন করেন গ্লেন ফিলিপস ১৭ বলে ১৮ রান করে। চার মাত্র একটি! আজকাল ওয়ানডে ম্যাচেও এমন ব্যাটিং করে জিতা কঠিন! 

সেই কঠিন কাজের বৈতরনী আর পার হতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। মার্ক চাপম্যান ১৬ বলে ৩২ রানের ছোট খাটো একটি টর্ণেডো ইনিগসে চেষ্টা করেছিলেন বলেই নিউজিল্যান্ডের স্কোরটা একটু ভদ্রস্ত দেখিয়েছে। তিনটি চার আর দুটি ছয় ছিল চাপম্যানের ইনিংসে।

হাতে সাত উইকেট থাকার পরও শেষ ৭ ওভারে নিউজিল্যান্ড নিতে পেরেছে ৫৯ রান। আগের ১৩ ওভারে রান রেট কম থাকায় শেষ পর্যন্ত চ্যালেন্জিং টোটাল দিতে পারেনি তারা পাকিস্থানের সামনে।

পাকিস্থানের বোলাররা পুরো ক্রেডিট পাবেন এই সাফল্যে। তবে ৬ উইকেটের জয়ে সবচেয়ে আলো ছড়িয়েছেন যিনি, সেই বাবর আজমই পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরষ্কার।  সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলের জয়ে অনবদ্য ভূমিকা রাখায় তার প্রতিদ্বন্দী আর কেউই অবশ্য ছিলেন না ম্যাচসেরায়।

Related posts

Leave a Comment